Necessities of setting up a Laboratory:
ল্যাবরেটরি বা গবেষণাগারের
প্রয়োজনীয়তা কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না; তবে বিশ্বায়নের কারণে এখন ব্যাক্তিগত
গবেষণাগারের প্রয়োজনীয়তা কিছুটা হলেও কমে এসেছে। তা হলেও প্রত্যেক ছাত্র/ছাত্রীর
একটা ব্যাক্তিগত ল্যাব থাকা একান্ত দরকারি। একটা ল্যাব থাকলে তুমি
স্বতঃস্ফুর্তভাবেই সৃজনশীল চিন্তা করতে শুরু করবে নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য যা
অত্যন্ত আবশ্যক। তাছাড়া কিভাবে কোন প্রয়োগযোগ্য তত্ত্বকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা
যায় তা চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আর একটা বিষয় হল এই যে এটা করে নির্মল
আনন্দ পাওয়া যায়। আর যারা শুধু পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই পড়াশোনা কর, তারাও ভালভাবে
কোন বিষয় বোঝার জন্য পরীক্ষণ কার্য সম্পাদন করতে পার। কাজেই যেভাবেই দেখি না কেন
তোমার একটা ব্যাক্তিগত গবেষণাগার থাকা প্রয়োজন। আর যদি বন্ধুদের নিয়ে কিছুটা বড়
আকারের ল্যাব বানাতে পার তাহলে তো কথাই নেই।
যারা পদার্থবিজ্ঞান পড় তাদের জন্য
একটা বড় ধরনের সুখবর হল তোমার ল্যাবের সবচেয়ে বড় উপকরণ হল তোমার মস্তিস্ক। আমি
একটুও বাড়িয়ে-কমিয়ে বলছি না। বিশ্বাস কর কতগুলো বই, একটা পড়ার টেবিল (ডেস্ক), কয়েকটা
কলম আর আবারিত পৃষ্ঠাই হল যেকোন পদার্থবিজ্ঞানীর ল্যাবের প্রধান উপাদান। আর একটা
অন্যতম উপাদান হল প্রকৃতি নিজেই। তাই দেরি না করে সেট আপ করে নাও তোমার ব্যাক্তিগত
ল্যাব। স্যার আইজ্যাক নিউটন শুধু কাগজে কলমে হিসেব করেই আবিস্কার (Discover) করেছিলেন গতির সূত্রসমূহ,
মহাকর্ষ সূত্র এবং আরও অনেক কিছু; যদিও তিনি কোন কিছু বানাতে বেশ সিদ্ধহস্ত ছিলেন।
এবার আসি আরেক জায়ান্ট (Giant) আইনস্টাইনের
কথায়। তার যা কিছু অবদান তার প্রায় সবই কাগজে কলমে, যদিও এগুলো বাস্তবায়িত করা যায়
এবং করা হচ্ছে।
নিশ্চয় পিয়েরে কুরি এবং ম্যাদাম কুরি-এর
নাম শুনেছ। পদার্থবিজ্ঞানের এক অনবদ্য জুটি। মাত্র কয়েক গ্রাম তেজস্ক্রিয় পদার্থ
পাওয়ার জন্য তারা কয়েক টন পদার্থ প্রক্রিয়াজাত করেছিলেন। তাও সব কিছুই ছিল
অনিশ্চিত।
টমাস আলভা এডিসন একজন অসাধারণ
জিনিয়াস। কয়েকশ পেটেন্ট আছে তার নামে। যদি ভেবে থাক যে এঁরা সবাই অর্গানাইজড
ল্যাবে কাজ করেছেন তাহলে তুমি পুরোপুরি সঠিক নও। হ্যাঁ, ওদের সুযোগ আমাদের চেয়ে
অনেক বেশি একথা আমি কোনভাবেই অস্বীকার করছি না। সত্যিটা হল যে ওরা আজ থেকে শত বছর পূর্বে যে সুযোগ পেত আমরা এখনো সে সুযোগ পাই
না। তাই বলে থেমে থাকব! নিশ্চয় জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম শুনে থাকবে। তিনি তো একজন
ভারতীয়। তার সুযোগ আমাদের চেয়ে কোন অংশে বেশি ছিল না। তবুও তিনি দেশীয় মিস্ত্রিদের
দিয়ে নিজে ডিজাইন করে এমন সব যন্ত্র তৈরি করেছিলেন যা ইউরোপীয়ানদেরও তাঁক লাগিয়ে
দিয়েছিল। তাহলে কেন আমরা পারব না!
যাহোক আমি যা বলতে চাই তা হল আমাদের
প্রত্যেকের ব্যাক্তিগত ল্যাব থাকা প্রয়োজন। একটা পদার্থবিজ্ঞানের ল্যাবের জন্য খুব
বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। তুমি তোমার ৯-১০ এর পদার্থবিজ্ঞান বই হাতে নাও, এবার দেখ
এতে কি কি তত্ত্ব আছে যা তুমি পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে পার, দেখবে যে খুবই
সহজে সবগুলো পরীক্ষা সম্পাদন করা যায়। শুধুমাত্র দৃঢ় ইচ্ছা থাকতে হবে।
শুধুমাত্র
পরীক্ষার জন্য না পড়ে আমাদের পড়াশোনা হোক গবেষণাধর্মী। তাহলেই পড়াশোনার সাথে আসবে
নির্মল আনন্দ আর বাড়বে শিক্ষার গুণগত মান।
No comments